যে 5 টি খাবারে দুধের চেয়ে (14 গুন) বেশি ক্যালসিয়ামে আছে । calcium rich foods list


 যে 5 টি খাবারে দুধের চেয়ে (14 গুন) বেশি ক্যালসিয়ামে আছে । calcium rich foods list

হ্যালো Everyone! কেমন আছেন সবাই?

আজকের বিষয়টা খুবই ইন্টারেস্টিং হতে চলেছে। আমরা যখন ক্যালসিয়ামের কথা ভাবি, তখন প্রথমেই আমাদের মাথায় কি আসে? হ্যাঁ, দুধ! কিন্তু ধরুন, যদি আমি আপনাদের বলি, দুধ ছাড়াও এমন কিছু খাবার আছে যেখানে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ দুধের থেকেও ১০ গুণ বেশি? শুনতে অবাক লাগছে, তাই না?

ভাবুন তো, হয়তো আপনি দুধ খেতে পছন্দ করেন না, অথবা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের কারণে দুধ খেতে পারেন না। তখন ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করবেন কীভাবে? আর আপনি কি জানেন একজন স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে ১০০০ মিলিগ্রাম। যা আমাদের দেশে বিশাল সংখ্যক মানুষ ক্যালসিয়ামের এই চাহিদা পূরণ করতে পারে না।

আর এই ক্যালসিয়ামের ঘাটতির জন্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে যেমন, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া, দাঁতের ক্ষয়, পেশীতে খিঁচ ধরা, এবং নার্ভের কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে যাওয়া হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, চুল ও নখ ভঙ্গুর হওয়া, এবং সবসময় ক্লান্ত ও দূর্বল এসবই হতে পারে ক্যালসিয়ামের অভাবে।

তাই আজকের ভিডিওটি দেখার পর আপনি এমন কিছু খাবারের নাম জানবেন, যেগুলো আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে যোগ করে খুব সহজেই ক্যালসিয়ামের এই ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার, এ খাবারগুলো একেবারে সহজলভ্য! তো চলুন, শুরু করা যাক?"

এবার একটু ভাবুন। ধরুন, আপনার ঘরের দেয়ালগুলো যদি দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে কী হবে? পুরো বাড়িটাই তো ভেঙে পড়বে, তাই না? ঠিক তেমনই, আমাদের শরীরের জন্য হাড় হলো সেই দেয়াল। আর হাড়কে শক্ত রাখার প্রধান উপাদান হলো ক্যালসিয়াম।

আমাদের শরীরের হাড়, দাঁত, এমনকি নার্ভ এবং পেশীগুলো ঠিকঠাক কাজ করতে গেলে ক্যালসিয়াম অতন্ত জরুরি। কিন্তু আমরা কি ঠিকমতো ক্যালসিয়াম নিচ্ছি? অনেক সময় আমরা দুধকে ক্যালসিয়ামের একমাত্র উৎস ভেবে বসে থাকি। অথচ, আমাদের চারপাশেই এমন কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলোতে দুধের তুলনায় অনেক বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে।"

"দুধ খেতে না পারলে কী করবেন? ধরুন, আপনার বাড়ির ছোট ছেলেটি দুধ একদমই পছন্দ করে না। আপনি তাকে কী খাওয়াবেন? তখন দুধের বিকল্প খুঁজবেন কোথায়? এই প্রশ্নগুলো হয়তো আপনাদের অনেকেরই মনে রয়েছে। চিন্তা করবেন না, কারণ আজ আমি আপনাদের এমন কিছু খাবারের কথা বলব, যেগুলো দুধের থেকে অনেক বেশি ক্যালসিয়াম সরবরাহ করতে পারে।

আপনি কি জানেন, আমাদের দেশের সজনে শাক—হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন, সজনে শাকেই দুধের চেয়েও বেশি ক্যালসিয়াম থাকে? সজনে শাক তো একেবারে সস্তায় বাজারে মেলে। কিন্তু আমরা কি এটা খাই? না, আমরা ভেবে দেখি না। কারণ আমরা জানিই না যে এই সাধারণ খাবারগুলো কতটা পুষ্টিকর।" 

১. সজনে শাক:

সজনে শাকে দুধের থেকে প্রায় ১৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম থাকে। যেখানে ১০০ মিলিলিটার দুধে প্রায় 125 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে, সেখানে ১০০ গ্রাম সজনে শাকে প্রায় ১৪৪৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সজনে শাক অত্যন্ত কার্যকর।

ক্যালসিয়াম ছাড়াও সজনে পাতায় আমিষ, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায়  যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন পুষ্টি উপাদান। শুধু তাই নয়, এটি শরীরে প্রদাহ কমায়, এবং হাড়কে মজবুত ও  শক্তিশালীকরে।

সজনে পাতা থেকে দুধের থেকেও বেশি ক্যালসিয়াম পেতে চাইলে এটি সঠিকভাবে খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। সজনে পাতা হালকা তেলে ভাজি করে বা ডাল, মাছের সাথে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও আপিনি সজনে পাতা ভর্তা করে খেতে পারেন। তাজা সজনে পাতা ব্লেন্ড করে তার রসের সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর পদ্ধতি। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত তাপে রান্না না করে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক অবস্থায় এটি গ্রহণ করলে এর ক্যালসিয়ামের গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে।

২. তিলের বীজ:

তিলে দুধের থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম থাকে। যেখানে ১০০ মিলিলিটার দুধে প্রায় 125 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, সেখানে ১০০ গ্রাম তিলে প্রায় ৯৮৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এই তিল থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়ার জন্য এটি সহজ পদ্ধতিতে খাওয়া উচিত। তিলকে ভাজা বা শুকনো গুঁড়ো করে ডাল, চাটনি, বা সালাদে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া তিলের ভর্তা বানিয়ে রুটি বা পরোটার সাথে খাওয়া, বা তিলের ভর্তা বানিয়ে তা খাবারের তালিকায় রাখলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সহজে পূরণ করা সম্ভব। নিয়মিত ১-২ চামচ তিল খাওয়া আপনার হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করবে। 

৩. কাঠবাদাম

কাঠবাদাম এমনই একটি সুপারফুড, যা আপনার শরীরকে ক্যালসিয়ামের বিশাল উৎস দিতে পারে। ১০০ গ্রাম কাঠবাদামে প্রায় ২৬০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম থাকে, যেখানে ১০০ মি.লি. দুধে মাত্র ১২৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এই বাদাম শুধু ক্যালসিয়াম নয়, হাড় ও দাঁতের সুস্থতায় প্রয়োজনীয় ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন-ই’তেও সমৃদ্ধ।

রাতে ৫-৬টি কাঠবাদাম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খোসা ছাড়িয়ে খান, কারণ খোসার ফাইটিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়।

4.ডুমুর

আপনি কি জানেন, শুকনো ডুমুর কিন্তু দুধের থেকেও বেশি ক্যালসিয়াম সরবরাহ করতে পারে? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন! যেখানে ১০০ মি.লি. দুধে ক্যালসিয়াম থাকে প্রায় ১২৫ মি.গ্রা., সেখানে ১০০ গ্রাম শুকনো ডুমুরে পাওয়া যায় প্রায় ১৬২ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম! ভাবুন তো, এত ছোট্ট একটি ফল এতটা পুষ্টিকর! শুধু তাই নয়, ডুমুরের ফাইবার ও আয়রনও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।

তাহলে কিভাবে খাবেন এই সুপারফুড? খুবই সহজ! রাতে 4-5 টি শুকনো ডুমুর এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই ভেজানো ডুমুর খালি পেটে খান এবং সেই পানি পান করুন। কেন? কারণ ডুমুর ভিজিয়ে খেলে এতে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড কমে যায়, যা ক্যালসিয়ামের শোষণ বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়া, এটি হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ কার্যকর।

৫. পালং শাক:

মনে আছে, ছোটবেলায় কার্টুনে পালং শাক খেয়ে সুপারম্যান শক্তিশালী হয়ে যেত? সেটি কিন্তু মিথ্যে নয়। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং আয়রন। ১০০ গ্রাম শাকে ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং বিটা ক্যারোটিনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই প্রতেক দিনের খাদ্যতালিকায় শাক রাখার চেষ্টা করবেন। 

তো বন্ধুরা, আপনারা কি লক্ষ্য করেছেন, এসব খাবার আমাদের সবার হাতের কাছেই রয়েছে? তাহলে কেন শুধু দুধের উপর নির্ভর করব? আপনি হয়তো ভাবছেন, এত সহজলভ্য খাবারগুলো এত উপকারী কেন আমরা জানতাম না। এটা জানার পর নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনার।

একটা ছোট্ট টিপস দিই। শুধু ক্যালসিয়াম খেলেই হবে না, ক্যালসিয়ামের সঠিক শোষণের জন্য ভিটামিন ডি দরকার। তাই রোদে কিছুক্ষণ বসা খুবই জরুরি। এছাড়া শাকসবজি রান্না করার সময় অল্প তাপে রান্না করুন, যাতে পুষ্টি নষ্ট না হয়।

তো বন্ধুরা, আজ আমরা দুধের মতোই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ কিছু খাবারের কথা জানলাম। এগুলো আপনার ডায়েটে যোগ করুন, এবং দেখুন কীভাবে আপনার স্বাস্থ্য বদলে যায়।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.