একজন সুস্থ তরুণ, কাঁঠাল খাওয়ার পর মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি…
ডাক্তাররা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না কীভাবে শরীরটা হঠাৎ এতো খারাপ হলো!
পরে জানা গেল, সে কাঁঠাল খাওয়ার পর এমন এক খাবার খেয়েছে, যেটা শরীরের ভেতরে বিষের মতো কাজ করে।
আজকে জানবেন কাঁঠাল খাওয়ার পর কোন ৫টি খাবার ভুলেও খাওয়া উচিত নয়।
অনেকে হয়তো ভাবছেন—কাঁঠাল তো এমনিতে খুব পুষ্টিকর একটা ফল, তাহলে এটায় সমস্যা কী? সেজন্য আগে দেখে নিই এর ভালো দিকগুলো।
কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গরমের সময় সহজেই সর্দি-জ্বর বা সংক্রমণ হতে পারে। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে এই ঝুঁকি কমে যায়।
গরমের দিনে অতিরিক্ত ঘাম এবং পানি শূন্যতার কারণে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আর কাঁঠাল গ্লুকোজ ফ্রুক্টোজ এবং অন্যান্য শক্তিদায়ক উপাদানে ভরপুর। ফলে কাঁঠাল খেলে তা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: এই ফলে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তোলে।তাই নিয়মিত কাঁঠাল খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ব্রণ বা মুখের দাগ কমে যায়। এছাড়াও কাঁঠালে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।
আমাদের অনেকের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম।কিন্তু কাঁঠাল আমাদের এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, কাঁঠাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। এবং মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান যেমন- বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থায়ামিন,রিবোফ্লাভিন,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,ফাইবার, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাংগানিজ,কপার আয়রনসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। কাঁঠালে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া আমিষ, শর্করা ও বিভিন্ন রকম ভিটামিনের ভাণ্ডার হচ্ছে এই কাঁঠাল।
কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যতালিকাগত আঁশ থাকে, যা সুস্থ পাচনতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। এর আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে, মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং নিয়মিত মলত্যাগের গতি বৃদ্ধি করে। এটি উপকারী অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে, যা হজম এবং সামগ্রিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এখন আমরা জানবো কাঁঠাল খাওয়ার পর যে ৫ টি খাবার খাওয়া উচিত নয়?
কাঁঠাল খাওয়ার পর দুধ বা দুধ দিয়ে তৈরি কিছু খাওয়া মানে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা। কারণ এই দুই ধরনের খাবারের প্রভাব একেবারে বিপরীত হওয়ায় শরীরে অ্যালার্জি স্কিন র্যাশ, অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যাও হতে পারে। দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। যা কাঁঠালের সঙ্গে মিশে পেটে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে যেমন অনেক ক্ষেত্রে এটি হজম না হওয়া, ডায়রিয়া বা পেট ফুলে যেতে পারে।
পেঁপে: অনেকেই একসঙ্গে অনেক ফল খান। তবে কাঁঠালের সঙ্গে কখনোই পেঁপে খাওয়া ঠিক নয়। কারণ পেঁপেতে থাকা ক্যালসিয়াম আর কাঁঠালে থাকা অক্সালেট পেটে গিয়ে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এতে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ কারণে কাঁঠাল খাওয়ার পর পেঁপে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
ঢেঁড়স: কাঁঠাল খাওয়ার পর ঢেঁড়স খাবেন না। পুষ্টিবিদের মতে, কাঁঠালের মধ্যে থাকা অক্সালেট ঢেঁড়সের সঙ্গে মিশে ফুসকুড়ি, ত্বক জ্বালাপোড়া হতে পারে। এমনকি বমি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই কাঁঠাল খাওয়ার পর কখনোই ঢেঁড়স খাবেন না।
দই: অনেকেই কাঁঠালের পর ঠান্ডা কিছু খেতে চান, আর তখনই তারা দই খেয়ে ফেলেন। কিন্তু কাঁঠাল এমনিতেই গরম প্রকৃতির ফল, তার সঙ্গে দই মিশলে পেটে তৈরি হয় অম্লতা ও গ্যাস। শরীরে শুরু হয় হজমের গোলমাল, বমি, পেট ব্যথা এমনকি ফুড পয়জনিং পর্যন্ত হতে পারে।
কাঁঠাল খাওয়ার পর পানি খাবেন না। অনেকেই কাঁঠাল খাওয়ার ঠিক পরপরই ঠান্ডা পানি খেয়ে ফেলেন।কিন্তু কাঁঠালের প্রাকৃতিক চিনির সঙ্গে ঠান্ডা পানি শরীরের বিপাক ক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়। ফলে হজম বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমনকি পেট ব্যথা বা হঠাৎ ব্লকেজের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
কাঁঠাল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও ভুল সময়ে ভুল খাবারের সঙ্গে খেলেই তা বিষের মতো ক্ষতি করতে পারে। তাই এই ৫টি খাবার কখনো কাঁঠালের পর খাবেন না
কাঁঠাল খেলে শরীরের কী কী উপকার হয়, আর কারা একেবারেই কাঁঠাল খাবেন না তা জানতে এই ভিডিওটি দেখুন: Video
কোন মন্তব্য নেই